দেবশ্রী-এক স্বর্গীয় অনুভূতি: পর্ব ১৬: খণ্ড: ৬

🔗 Original Chapter Link: https://chotimela.com/jhal-moshla/debosree-ek-shorgio-onubhuti-16-6/

🕰️ Posted on Thu Jan 06 2022 by ✍️ Jupiter10 (মৃত তারার গল্প।) (Profile)

📂 Category:
📖 2758 words / 13 min read
🏷️ Tags:

Parent
পরেরদিন আমাদের বাইরে যাওয়ার কোন পরিকল্পনা ছিল না। হোটেল থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে একটা বিচে স্নান করার প্লান হল। মা একটা গাঢ় মেরুন রঙের সুতির ছাপা নাইটি পরে তিন্নি দের রুমের বাইরে দাঁড়িয়েছিল। আশ্চর্য হলাম। মা কি এটা পরে সমুদ্রে স্নান করতে যাবে? আমি অবাক হয়ে তাঁর দিকে তাকালাম। “এমন করে কি দেখছিস বাবু?” সত্যি এমন মুহূর্তে আমি কি উত্তর দেবো, ভেবে পেলাম না। তুবও আড়ষ্ট গলায় বললাম, “মা? তুমি কি নাইটি পরে জলে নামবে?” “হ্যাঁ…। তাতে কি হয়েছে?” ,সহজাত উত্তর মায়ের। আমি মনে মনে বললাম, “মা এটা তোমার দিঘা বা পুরি নয় যে তুমি এমনিই নাইটি পরে জলে নেমে যাবে”। এমন মুহূর্তে বাবাও দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে এলেন।হাফ প্যান্ট। হাফ হাতা জামা আর পায়ে চপ্পল। হাতে একখানা ঝোলা ব্যাগ। বুঝলাম ওতে জামাকাপড় আছে। বাবা আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, “অ্যায় বাবু! তুই তৈরি তো…? স্নানে যাবো আমরা”। তিনি ঘড়ি দেখলেন, “এখন এগারোটা বাজে। ওখানে স্নান করেই কোন একটা রেস্তরাঁয় লাঞ্চ করে নেবো”। আমি “হুম” শব্দ করে রুমের মধ্যে ঢুকে পোশাক বদলে বেরিয়ে এলাম। বাবার মতো আমিও টি-শার্ট এবং বারমুণ্ডা প্যান্ট পরে বেরিয়ে এলাম। বাবা আমাদের রুমের দরজা গুলো লক করছিলেন,তখনি তিন্নিরা বেরিয়ে এলো। ওরে বাবা! তিন্নি তো সেই! সে একটা জিন্সের শর্টস পরেছে। তাও আবার হাঁটু থেকে বিস্তর উপরে। ওর ফর্সা সুঠাম ঠাই দুটো দেখে চোখ কপালে উঠে যায়। আর উপরে একটা টি-শার্ট। মায়ের ভয়ে ওর দিকে তাকাতে পারছিলাম না। মঞ্জু কাকিমাও মায়ের মতো একটা নাইটি পরে বেরিয়ে এলেন। কালো রঙের নাইটি। আর তিন্নির বাবা ট্র্যাক স্যুট আর হাফ হাতা গেঞ্জি। গাড়ি নীচে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিলো। আমরা নিজের জায়গা মতো গাড়িতে গিয়ে উঠে পড়লাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই বোগমালো বিচে এসে হাজির হলাম। ভীষণ লোকজন রয়েছে এখানে। তারমানে ভালোই বিখ্যাত এই বিচ। বালির মধ্যে হাঁটতে হাঁটতে তিন্নি আমার কাছে এসে বলল, “তোমার ক্যামেরাটা আনোনি?” বললাম, “না আনিনি। সমুদ্রের জলে ভিজে যাবে বলে রুমের মধ্যেই রেখে এসেছি!” দেখলাম তিন্নি আমার কথা শুনে একটু হতাশ হয়ে পড়ল। আমারও কিছু করার ছিল না। সে বারে মা’ই ওদের সামনে ক্যামেরা বের করতে মানা করেছিলো। “অ্যায় বাবু! এই দিকে শোন”! মায়ের ডাক পেলাম আমি। আমি জোরে হাঁটা দিয়ে মায়ের কাছে এলাম, “হ্যাঁ বল!” মা বলল, “সমুদ্রে চান করবি ঠিকই কিন্তু বেশি দূর একদম যাবি না। আর মোবাইল টা তোর বাবা কে দিয়ে দিয়েছিস তো?” মায়ের কথা শুনে আমি পকেটে হাত দিলাম। না মোবাইলটা পকেটেই রয়ে গেছে। আমি বাবাকে ডাক দিলাম। ততক্ষণে মা এবং মঞ্জু কাকিমা কথা বলতে বলতে এগিয়ে গেলেন। আমি বাবাকে ফোনটা দিয়ে সমুদ্রের ধারে চলে এলাম। তিন্নি আমার কাছে আসার চেষ্টা করছিলো। কিন্তু আমি তাকে এড়িয়ে চলছিলাম।পাছে মা আবার না রেগে যায়। সে আমার কাছে পাত্তা না পেয়ে মা আর মঞ্জু কাকিমার কাছে দৌড়ে চলে যায়। মা রা ততক্ষণে জলে নেমে পড়েছে। মা আর মঞ্জু কাকিমা একে ওপরের হাত ধরে জলের ঢেউয়ের সম্মুখীন হচ্ছিলেন। তাদের নাইটি পুরোপুরি ভিজে গেছে। আমি তাদের থেকে সামান্য দূরে ছিলাম। বাবা আর সৌমিত্র কাকু জলের ধারে হাঁটছিলেন আর নিজেদের মধ্যে গল্পে মেতে ছিলেন। আমার চোখ এখন দুই milf এর দিকে। দুই সেরা চল্লিশোর্ধা বঙ্গ সুন্দরী। জলক্রীড়ায় তাদের শরীর সম্পূর্ণ ভিজে গেছে। তাঁরা তিনজনে একে ওপরের হাত ধরে খিলখিলিয়ে হেসে ঢেউয়ের সঙ্গে সঙ্গে জলে বসছিল আবার ঢেউ বিলীন হলে উঠে দাঁড়াচ্ছিল। ফলে তাদের শরীরে ভেজা নাইটি চিটিয়ে লেগে যাচ্ছিলো। পেছন দিক দিয়ে তাদের ভেজা শরীরে মাথার খোঁপা থেকে নাইটির উন্মুক্ত অঞ্চল থেকে শিরদাঁড়ার খাঁজ বেয়ে নীচে নেমে এসে উঁচু নিতম্ব পর্বতে আমার দৃষ্টি স্থির হচ্ছিলো।ঢেউ ফিরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মা এবং মঞ্জু কাকিমার পাছার ফাটলে নাইটি আঁটকে যাচ্ছিলো। আবার যখন ঢেউ ফিরে আসে তখন নাইটি ব্যাঙের মতো ফুলে উঠছিল। ওই রকমই নিরন্তর চলছিলো। জলের টানে ভেজা নাইটি তাদের সর্বাঙ্গে এমন ভাবে লেগে যায় যেন হাত দিয়ে টানলেও ছাড়ানো যাবে না।তিন্নি জিন্সের মোটা কাপড়ের শর্টস পরে ছিল বলে ওর শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ অতটা বোঝা যাচ্ছিলো না। কিন্তু মা এবং মঞ্জু কাকিমার সকল অবয়ব চোখের সামনে ধরা দিচ্ছিল। যেন একপ্রকার তাঁরা উলঙ্গই শুধু মাত্র মেরুন এবং কালো কালি দিয়ে রং করা হয়েছিল তাদের শরীরকে। মনে তাঁর নাইটি ছাড়া ভেতরে কিছুই পরে ছিলোনা। মায়ের নিতম্ব বিভাজনে নাইটি ঢুকে যাচ্ছিল সেটা দেখে আমার বুকে দামামা বেজে উঠছিল। লিঙ্গ অনায়াস খাড়া হয়ে যাচ্ছিলো। পা দুটো আমার থর থর করে কাঁপছিল। দাঁড়িয়ে থাকতে অস্বচ্ছন্দ বোধ করছিলাম। মনে হচ্ছিলো দূরে গিয়ে শুকনো গরম বালিতে বসে প্যান্ট নামিয়ে হস্তমৈথুন করি। কিন্তু কোন উপায় ছিল না। ভাগ্যভালো যে আমি জাঙ্গিয়া পরেছিলাম। নইলে সবাই বুঝতে পারতো যে আমার প্যান্টের মধ্যে একটা লম্বা তাঁবু টাঙ্গানো হয়েছে। এর আগে কোনদিন এতো স্পষ্ট রূপে মায়ের নিতম্ব পরিদর্শন করিনি। মায়ের স্থুল এবং উঁচু নিতম্ব দেখেই বিস্মিত হচ্ছি। আর জলক্রীড়ার সঙ্গে সঙ্গে যখন নাইটি তাঁর পশ্চাৎদ্দেশের ফাটলে ঢুকে পড়ছে সেটা দেখে তো আমার হৃদপিণ্ড প্রায় বিকল হয়ে যাবার পথে। মনে হচ্ছে যেন দৌড়ে গিয়ে মাকে পেছন দিক থেকে জড়িয়ে ধরি। আর তাঁর ঘাড়ে চুমু খেতে খেতে তাঁর পেছনে হাঁটু মুড়ে বসে তাঁর পোঁদ কামড়ে ধরি। খুবই জোরে যেন তাঁর ফর্সা নিতম্ব ত্বকে আমার দাঁতের কামড়ানো দাগ স্পষ্ট বোঝা যায়। আর মা মিষ্টি যন্ত্রণায় সজোরে শীৎকার করে ওঠে। মায়ের সৌন্দর্যতা নিরীক্ষণের সঙ্গে সঙ্গে আমি মঞ্জু কাকিমার শরীরের ওপরেও নজর টিকিয়ে রেখেছিলাম। তাঁর নিতম্ব মায়ের মতো এতো উন্নত না হলেও যথেষ্ঠই মনোহারী। মায়ের মতো অতো স্ফীত না এবং অপেক্ষাকৃত মেদবহুল শরীর হবার কারণে মায়ের মতো তাঁর কোমর ঢেউ খেলানো নয়। তবুও একটা চমক আছে তাঁর শরীরে। আমি তাঁদের দেখতে দেখতেও হারিয়ে পড়ে ছিলাম। সমুদ্রের ঢেউয়ের আওয়াজ এবং তাঁদের চিৎকার চেঁচামেচিতে এক অজানা জগতে পৌঁছে গিয়েছিলাম। বেশ কিছুক্ষণ ধরে তাঁরা জলবিহারের আনন্দ নিয়ে পাড়ের দিকে এগিয়ে আসছিলো। জলের মধ্যে মায়ের হাঁটতে অসুবিধা হচ্ছিলো। ফলে বাম হাত দিয়ে নাইটির কাপড় সামান্য উপরে তুলে হাঁটছিল। জলে ভেজা পুরো শরীরে তাঁর নাইটি জড়িয়ে গিয়েছিল। তাতে মায়ের পীনোন্নত বক্ষ সম্পূর্ণ রূপে ধরা দিচ্ছিল। এটা সুস্পষ্ট যে মা কোন প্যানটি অথবা ব্রা পরে নি। তাঁর স্তনের এমন ছলাৎ ছলাৎ করে নাচার কারনেই বুঝতে পারা যায় যে মায়ের গায়ে সুতির নাইটি ছাড়া আর দ্বিতীয় কোন পোশাক নেই। মায়ের পেটে মেদ আছে এবং জলে ভেজার জন্য তাঁর ভুঁড়িও স্পষ্ট চোখের সামনে ধরা দেয়। সুঠাম দুই উরুর সন্ধি স্থলে এবং তাঁর মেদবহুল উদরের নীচে গভীর ঢালু অঞ্চল বা খাই আর ওখানেই আমার জন্মদ্বার লুকিয়ে আছে। ভাবলাম মায়ের হাঁটার সময় ভেজা নাইটির মধ্যেই তাঁর উরুদ্বয়ের মধ্যাংশের ফোলা ত্রিকোণ অঞ্চলটার আভাস পাবো কিন্তু তা আর হল না। মায়ের হাঁটার সঙ্গে সঙ্গে এবং তার হাত দিয়ে নাইটির কাপড় শরীর থেকে আলগা করার সঙ্গে সঙ্গে তার শরীরের সমস্ত ভাঁজ লুকিয়ে পড়ল। সিক্ত গায়ে মা নোনা জল থেকে বেরিয়ে আসতে দেখে তাকে কোন রহস্যময়ী জলপরীর থেকে কম মনে হচ্ছিলো না। “কি হল বাবু এমন করে আমার দিকে তাকিয়ে আছিস কেন?” আমি আক্ষেপ করে বললাম, “একলাই স্নানে চলে গেলে বল? আমাকে একবারও ডাকবার প্রয়োজন মনে করলে না তুমি?” মা ভেজা চুল নিংড়ে বলে, “উফফ বাবা! মঞ্জুই তো আমাকে হাত ধরে টেনে…। আর মেয়েদের স্নানে তুই গিয়ে কি করবি? তোর বাবা কোথায়?” আমি আঙ্গুলের ইশারায় দেখালাম, “ওই তো বাবা। তাঁরা দুজনে কিসের গল্প শুরু করেছেন কে জানে?” মায়ের মুখে বিরক্তি, “উফফ! ডাকতো ওনাকে। ওয়াশ রুমে গিয়ে আবার স্নান করতে হবে। শুকনো জামাকাপড় গুলো নিয়ে আসতে বল। আর তুই স্নান করবি না?” “হ্যাঁ তোমরা যাও। আমরা তিন জন মিলে স্নান করে ফিরছি!” মা বলল, “তুই দৌড়ে গিয়ে তোর বাবার কাছে থেকে ব্যাগটা নিয়ে আমায় দে। ভেজা গায়ে থাকতে পারছিনা। শীত করছে প্রচণ্ড”। আমি বাবার কাছে থেকে ব্যাগটা এনে মাকে দিয়ে আবার বাবার কাছে চলে গেলাম। “বাবা তুমি স্নান করবে না?” বাবা সিগারেটে টান দিয়ে বলল, “তুই কর। আমরা করবো না”। আমি আশ্চর্য হলাম। বলেন কি লোকটা? আমার পুরো মজাটাই মাটিতে মিশিয়ে দিলো।যার জন্য আমারও সমুদ্র স্নান অপূর্ণ রয়ে গেলো। বালির উপর দিয়ে হাঁটতে লাগলাম। কিছু দূরে আলাদা করে মিষ্টি জলের স্নান করার ব্যবস্থা ছিল। মা’রা সেখানেই স্নান করে পোশাক পরে বেরিয়ে আসবে। আমি মনমরা হয়ে তাঁদের কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম। তিন্নি বোধয় প্রথমে ঢুকেছে। মা আর মঞ্জু কাকিমা বাইরে দাঁড়িয়েছিল। সমুদ্র হাওয়ায় তাঁদের ভেজা কাপড় প্রায় শুকিয়ে এসেছে। মা আমায় বলল, “কি রে? স্নান করলি না তুই?” আমি বিরক্তিভাব প্রকট করলাম, “ধুর! একা একা কার সঙ্গে স্নান করবো?” “কেন? তোর বাবারা করল না স্নান?” আমি গোমড়া মুখ করে, “নাহ!” “ধুর! এই লোকটাকে নিয়ে আর পারা গেলো না”। ততক্ষণে তিন্নি স্নান করে পোশাক বদলে বেরিয়ে এলো। সঙ্গে আলাদা একজন মেয়ে। বুঝলাম ভেতরে আলাদা করে দুজনের স্নানের ব্যবস্থা আছে। মা আর মঞ্জু কাকিমা সেখানে ঢুকে পড়ল। তিন্নি বেরিয়ে আসতেই আমার দিকে হেসে তাকাল। আমিও তাকে নকল হাসি দিলাম। বাবা আর কাকু খেজুরে গল্প করছিলো দূরে দাঁড়িয়ে। মায়ের কথা ভেবে আমি তিন্নিকে এড়িয়ে চলছিলাম। আর এদিকে তিন্নি আমাকে কাছে মন উড়ু উড়ু তার। “কি হল কৌশিক দা। তোমাকে ইতস্তত লাগছে কেন?” আমি একটু ধরা গলায় বললাম, “কেন বলতো?” তিন্নি হাসল, “তুমি না বড্ড আনপ্রেডিকটেবল!” আমি জোর দিয়ে, “কেন?” তিন্নি আবার হাসল, “এইতো গতকাল তুমি আমার সঙ্গে কত হাসিখুশি হয়ে মিশছিলে! আর আজকে কেমন এড়িয়ে চলছো আমায়”। আমি থতমত খেয়ে গেলাম, “ওহ তেমন কিছু না…। আজ এমনিতেই আমার মুড ভালো নেই”। তিন্নি আমার দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে ছিল। সেই ঘটনার পর থেকে তিন্নির উপর আমার সেই ভালোলাগা আর দ্বিতীয়বার জন্মায়নি। এখন শুধুই মানবিকতার খাতিরে ওর সঙ্গে সুস্থ্য আলাপ বজায় রেখেছি। মা ঠিকই বলতো এই মেয়ের থেকে দুরেই থাকা ভালো। তিন্নি নিঃসন্দেহে সুন্দরী মেয়ে। কিন্তু ওর মুখের মধ্যে মিষ্টতা ভাব একদমই নেই। ফলে সেই টান আগেও তেমন অনুভব করিনি যখন আমার মনে হয়েছিলো সত্যিই আমার একটা গার্লফ্রেন্ডের প্রয়োজন আছে। তবে সেই দিনের পর থেকে আর ভালো লাগা বিন্দুমাত্র অবশিষ্ট নেই। সেই ঘটনা আমি মনে না করলেও জীবনে কোনোদিন ভুলবো না। ভদ্রলোকের ছেলেকে সে মাটিতে মিশিয়েছিল। যদিও পরে দুই পরিবার এক হয়। বাবা আর সৌমিত্র কাকুর মধ্যে পুনরায় বন্ধুত্ব স্থাপন হলেও মা কিন্তু সেই অপমান একদমও ভোলেনি। আমিও ভুলবো না। মায়ের সঙ্গে তিনি কেমন অভদ্র আচরণ করেছিলেন। শুধুমাত্র বাবার মুখ চেয়ে মা আর কিছু বলে না। কিন্তু এই মেয়ের ষড়যন্ত্র হয়তো মা ভালোই বুঝতে পারে তাই মা ওর থেকে আমাকে দূরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে। আমার সেই দিনের ঘটনাটা খুব জানতে ইচ্ছা করে। বিশেষ করে তিন্নির দিকটা। ওর ঘরে আসলে কি ঘটেছিল। তিন্নি কি বলেছিল ওর বাবা মাকে যে ওনারা এতো রাতে আমার বাবা মাকে ফোন করে নালিশ জানিয়েছিল। কথা গুলো ভাবতে ভাবতে তিন্নির দিকে তাকালাম। “আচ্ছা তিন্নি! তোর কাছে আমার কিছু জানার আছে…। বলবি?” তিন্নি আমার দিকে ঘুরে তাকাল, “কি? বল?” “আচ্ছা তোর সেই দিনের কথা মনে আছে?” “কোন দিনের?” “সেই দিনের। যেদিন আমরা…। তোদের ছাদে দেখা করেছিলাম”। আমার কথা শুনে তিন্নির মুখে স্বল্প লাজুক মিশ্রিত হাসি। সে মুখ নামাল। মাথা নেড়ে বলল, “হ্যাঁ!” “আচ্ছা তুই জানিস তোর বাবা আমার বাড়িতে ফোন করেছিলো। আমার মাকে যাচ্ছে তাই বলেছিল”। তিন্নির মুখে লজ্জা ভাব অধাও। এখন ওর মুখে একটা ভয় মিশ্রিত গ্লানি। বলল, “হ্যাঁ আমি সেখানেই ছিলাম”। “জানিস তুই এর জন্য আমাদের বাড়িতে অনেক অশান্তি হয়েছিলো?” সে ঘাড় নামিয়ে ইশারায় সম্মতি দিলো। আমি কিছুক্ষণের জন্য চুপ করে গেলাম। সে আমার মুখের দিকে তাকাল, “এতে আমার কি দোষ বল?” আমি অধীর গলায়, “ডেকে ছিলিস তো তুই তিন্নি!” “হ্যাঁ তো আমি তোমাকে খারাপ কিছু করার জন্য ডাকিনি”, তিন্নির সাফাই। “এতো রাতে একটা মেয়ে একটা ছেলেকে কিসের জন্য ডাকে শুনি?” তিন্নি চুপ করে রইল। “তোর বাবাকে তুইই বলে ছিলিস তাই না?” তিন্নির গলা কাঁপছিল, “হ্যাঁ তবে…।আমাদের মধ্যে কি হয়ে ছিল আমি এখনও কাউকে জানাইনি কৌশিক দা”। “ওহ ত্রিনয়নী সান্যাল! কেউ এতো বোকা নয়”। তিন্নির মুখের রং উড়ে গেলো। সে অন্য দিকে তাকিয়ে বলল, “সেদিন যদি পালানোর সময় ঝাঁপ দিয়ে ঝোপের মধ্যে না পড়তে তাহলে হয়তো এতো কিছু ঘটতোই না”। “আচ্ছা তোকে দেখে তোর বাবা মা কি করেছিলো…? মানে কি বলেছিল তোকে সেদিন?” তিন্নি একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে, “ তাঁরা ভাবে চোর এসেছে। আর আমাকে ঘরে না দেখতে পেয়ে ছাদে চলে যায়। আমার পোশাক তখনও অগোছালো ছিল। তাঁরা ভেবেছিলো চোর আমার সঙ্গে কোন দুষ্কর্ম করে ফেলেছে। আমি তাঁদের বোঝায়। ঘরে কোন চোর আসেনি। তাঁরা আমাকে জেরা করে”। “আর ওমনিই তুই আমার নামটা বলে ফেলিস!” “হুম বাবা মা খুব রেগে গিয়েছিলো। তাঁরা ভাবতেও পারেনি যে তুমি এইরকম কাজ করতে পারো”। “উফফ শাট-আপ ত্রিনয়নী! তার মানে এখন পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে দোষটা এখন কার?” তিন্নি আমার হাত চেপে ধরল, “কিন্তু এখন তো সব নর্মাল হয়ে গেছে। এখন আর পুরনো কথা ভেবো না”। আমি ঝাঁকিয়ে নিজের হাত সরিয়ে নিলাম, “তোর বাবা মায়ের মুখ দেখেছিস? এখনও তাঁরা আমাকে ক্রিমিনাল মনে করে। তোর মা এখনও আমার দিকে রাগি ভাব নিয়ে তাকায়”। “ওটা তোমার মিথ্যা ধারণা কৌশিক দা”। “বাজে কথা বলিস না তিন্নি!আর আমার মায়ের এতে কি দোষ বল? আমার মা কেন পর লোকের কথা শুনতে যাবে?” “বাবা তো দেবশ্রী আণ্টীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন! তাতেও তুমি?” “আর আমার? আমাকে সেদিন কি কাণ্ড ঘটাতে হয়েছে সেটার ক্ষমা কে চাইবে বল?” “কি হয়েছিলো সেদিন?” করুণ স্বরে প্রশ্ন তিন্নির। “থাক তোকে আর জানতে হবে না”। “আমি তোমাকে ভালোবাসি কৌশিক!” “ধুর ছাই!” এমন মুহূর্তে মা বাথরুম থেকে বেরিয়ে এলো। আর আমিও সোজা হয়ে দাঁড়ালাম। তিন্নির মা তিন্নির কাছে চলে গেলো। “তোর বাবাকে ডাক বাবু। না রুমে গিয়ে স্নান করবে?” “আমি জানিনা মা। তবে আমি এখানে স্নান করতে চাই না”। “হোটেলে খাবার অর্ডার করা হয়নি বাবু। আমাদের বাইরে খাবার প্ল্যান আছে। আবার হোটেলে ফিরলে দেরি হয়ে যাবে”। ততক্ষণে বাবাও এসে হাজির। মা তাঁর দিকে তাকাল, “কি গো তুমি সমুদ্রে স্নান করবে না?” বাবা মুখ বেঁকাল, “নাহ। এখানেই টিকিট দিয়ে স্নান করে নিই”। আমাকেও বাকী দুই পুরুষের সঙ্গে স্নান করে নিতে হল। সেখান থেকে বেরিয়ে পাশের একটা রেস্তরাঁয় আমরা দুপুরের খাবার সারলাম। তিন্নির সঙ্গে তারপর থেকে কথাবার্তা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিলাম। ও আমার দিকে মাঝে মধ্যে আড় চোখে তাকালেও আমি পুরোপুরি এড়িয়ে চলছিলাম তাকে। রাতের বেলা আমরা তিনজন মিলে একসঙ্গে ডিনার করছিলাম। খেতে খেতে মা আমায় জিজ্ঞেস করল, “আচ্ছা বাবু। দুপুর বেলা ওই মেয়ে তোকে কি বলছিল রে?” মায়ের প্রশ্ন শুনে বুকটা আমার ধক করে কেঁপে উঠল। বললাম, “ও বলছিল নাকি ও আমাকে খুব ভালোবাসে”। “মেয়েটা বড্ড অভিনয় জানে।ঠিক ওর মায়ের মত হয়েছে মেয়েটা।নইলে সেবারে মার্কেটে কত কেনা করাল ওর বরটাকে দিয়ে। আর বরটাকেও কেমন করে বশ করে রাখতে হয় সে জানে”। মায়ের কথা শুনে খাবার মুখে নিয়ে বাবা বলল, “মঞ্জুর সঙ্গে ভাবটা তোমারই বেশি দেবো। আর সৌমিত্রকে আমি চিনি। ও মটেও বউয়ের বশে চলে না”। মা রেগে যায়, “তার মানে তুমি কি বলতে চাইছ? তুমি বউয়ের বশে চলো? পড়তো না…? ওই দেশের মেয়ে তোমার ভাগ্যে! সারা জীবন নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাত তোমাকে”। বাবারও রক্ত গরম হয়ে আসে। খাবারের থালায় হাত মুঠো করে, “তুমিও কম যাও না। মঞ্জুর সঙ্গে হাতে হাত রেখে জলে কে ঝাঁপাচ্ছিল শুনি?” “তাতে কি হয়েছে? পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া করবো নাকি?” পরিস্থিতি দেখলাম বেগতিক হয়ে যাচ্ছে। আমি মায়ের কাঁধে হাত রাখলাম, “আহ ছাড় না মা!” মা, “ তুই ওই মেয়ের সঙ্গে আর একদম মিশবি না বাবু। তিন দিন আছি ভালই ভালই পের করে বাড়ি ফিরে যাবো। তারপর কেউ কাউকে চিনবে না। যার বন্ধু পীরিত সে বুঝবে”। বাবা আবার মায়ের কথা কাটল, “বন্ধু আমার ভালোই”। “আচ্ছা তো বন্ধুর সঙ্গেই থাকতে হতো। কেন আমায় বিয়ে করতে গেলে? M.A পাশ করা বউয়ের কি দরকার ছিল? বন্ধুকে বলেই জুটিয়ে নিতে তার মতো। অশিক্ষিত। অর্ধ শিক্ষিত!” বাবা খাবার সম্পূর্ণ করে উঠে গেলো, “মঞ্জু মোটেও অশিক্ষিত নয়। ও উচ্চমাধ্যমিক পাশ। আর M.A পাশের নমুনা আমি দেখতে পাচ্ছি চোখের সামনে”। বাবার কথা শুনে মা বেজায় চটে গেলো। খাবারের থালা ঠেলে সরিয়ে মা কাঁদতে লাগলো, “আমি খাবো না!!! লোকটা সবসময় আমার সঙ্গে অশান্তি করে। আমি আর খাবো না”। বাবার উপর রাগ হচ্ছিলো আমার। সত্যিই লোকটা পরিস্থিতি বিগড়ে দিয়ে চলে গেলো। আমি মাকে সান্ত্বনা দিতে লাগলাম। মা নাক ফুলিয়ে কাঁদছিল। চোখের জল? না গড়িয়ে পড়ার মতো চোখের জল ছিল না। তাতেও আমি তাঁর চোখ মুছিয়ে দিচ্ছিলাম। “আহ মা কেঁদো না!” মা আমার কোন কথা শুনছিল না। আপন মনেই বলে যাচ্ছিলো, “অনেক ভালো ভালো পাত্র এসেছিলো আমার বিয়ের সময়। একটা স্কুলে চাকরিও করতাম। এই মুখুজ্জি পরিবারে বিয়ে না করলেই আমার ভালো হতো…। তোর বাপের থেকে আমি বেশি শিক্ষিত জানিস? কিন্তু লোকটার আমি রান্ধুনী হয়েই রয়ে গেলাম সারা জীবন। কোন সম্মান নেই আমার”। বাবা ততক্ষণে হাত মুখ ধুয়ে বেরিয়ে আসেন, “ইঞ্জিনিয়ার হয়াও সেই সময় চাট্টি খানি ব্যাপার ছিল না। ছেলে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে এটা দেখতেও আমাদের ঘরে লোক চলে আসতো। পাড়া দিয়ে পেরলে সবাই আঙ্গুল দিয়ে দেখাত। দ্যাখ এই ছেলে খড়গপুর আয়. আয়. টি তে পড়ে”। “আমিও বিশ্বভারতীতে পড়েছি!” মায়ের কথা শুনে বাবা একটা চাপা হাসি দেয়। বিছানার উপর মেঝেতে পা নামিয়ে বসে। তোয়ালে দিয়ে হাত মুছে। “বিয়ের সময় তোমার বাবাই কাকুতিমিনতি করে ছিলেন”। মা আবার রেগে যায়, “আমার বাবা…? না তোমার বাবা? মা লক্ষ্মী। মা লক্ষ্মী বলে তোমার বাবা মা’ই আমাকে পছন্দ করেছিলেন…। আমার বাবা মা সেদিন যদি এই ভুলটা না করতেন, তাহলে আমার ভাগ্যের চাকা অন্য দিকে ঘুরত?” হাত মুছে বাবা তোয়ালেটা বিছানায় রেখে দিয়ে উঠে দাঁড়াল, “চল বাবু! আজ তোর সঙ্গে ঘুমাবো”। বাবার কথা শুনে আমি অবাক। সেই কোন যুগে বাবা আর আমি একসঙ্গে ঘুমিয়েছি আমার মনে নেই। আর তাছাড়া বাবা আমার সঙ্গে ঘুমালে আমার ফ্যাশন টিভি দেখা হবে না। বললাম, “বাবা তুমি ওখানে একাই শুয়ে যাও। আমি বরং মায়ের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়বো” মা চেঁচিয়ে উঠল, “অ্যায় বাবু! তুই তোর রুমেই ঘুমাবি। কাউকে সঙ্গে নেবার প্রয়োজন নেই”। বাবা দরজার দিকে এগোচ্ছিল। মায়ের কথা শুনে ঘুরে দাঁড়াল। মাও চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াল। মা আর খাবে না। আমারও খাবার শেষ। আমি আর মা হাত ধুতে গেলাম। বেরিয়ে আসতেই ওয়েটার দরজা নক করে আমাদের প্লেট গুলো নিয়ে চলে গেলো। বিছানার উপর রাখা তোয়ালে টায় হাত মুছে মা একটা বালিশ এবং চাদর পর পর ছুঁড়ে রেখে দিলো,তাদের বিছানার বাম দিকে কিছুটা দূরে দুটো চেয়ারের উপর। আর বাবা নির্বাক হয়ে সব দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিল। এই সুযোগে আমিও তাঁদেরকে গুড নাইট বলে বেরিয়ে এলাম। আমার নিজের রুমের দরজা খুলে বিছানায় চিৎ হয়ে শুয়ে পড়লাম। বালিশটাকে উপরে তুলে পিঠের পেছনে রাখলাম। আর টিভি অন করে দিলাম।
Parent